মো.রকিবুল হাসান বিশ্বাস, সিংগাইর ( মানিকগঞ্জ)প্রতিনিধি:আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে মানিকগঞ্জের সিংগাইরে কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে প্রায় ২৮ হাজার গবাদিপশু । যা চাহিদার চেয়ে এক হাজার ৮২ বেশী । খামারির পাশাপাশি অনেক কৃষক ও বিক্রির জন্য গরু প্রস্তুত করেছেন। মাসের শুরু থেকেই উপজেলার প্রতিটি হাটে পশু কেনা-বেচা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর । ইতিমধ্যেই উপজেলার পশুর হাটগুলোতে গরু ছাগলের সরবরাহ বেড়েছে । তবে ক্রেতা সঙ্কট থাকায় পশু বিক্রি করে প্রত্যাশিত দাম পাচ্ছেন না খামারিরা। ফলে অনেকের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা । অনেকে কম দামে পশু বিক্রি করতে অনীহা প্রকাশ করছেন । খামারিরা আশঙ্কা করছেন,সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু দেশে প্রবেশ করলে তাদের পথে বসতে হবে । এটা বন্ধে প্রশাসনের নজরদারি দাবি করছেন তারা ।
সিংগাইর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় ১১ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৬ টি হাট এবং ছোট বড় মিলিয়ে দু’ শতাধিক খামার রয়েছে । এসব খামারে ২৭ হাজার ৮৮৩ গরু ছাগল লালন – পালন করছেন। কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ২৬ হাজার ৭৯১ । যা চাহিদা মেটানোর পরে ও এক হাজার ৮২ পশু উদ্বৃত্ত থাকবে । এর মধ্যে গরু ১০ হাজার ৪৯৪, ছাগল- ভেড়া ১৭ হাজার ২৯৪ ও মহিষ ৮৫ টি । উপজেলায় সবচেয়ে বড় গরুর খামার রয়েছে ধল্লা ইউনিয়নের খাসেরচর হেলদি হারভেস্ট অর্গানিক ফার্ম হাউজ নামে । খামারটিতে শাহীওয়াল, দেশি সিন্ধী ও লোকাল রেড চিটাগাং জাতের ১৫০ টি গরু রয়েছে । এখানে সর্বনিম্ন ২ লাখ টাকা থেকে শুরু করে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত দামের গরু রয়েছে ।
হেলদি হারভেস্ট অর্গানিক ফার্ম হাউজের ম্যানেজার আব্দুল জলিল বলেন, ইউনিফিল গ্রুপের এ প্রতিষ্ঠানটি ২০২২ সালে ১২৫ শতাংশ জায়গায় চালু করি । কোনো ধরনের ফিড ও কেমিক্যাল ছাড়া শুধুমাত্র অর্গানিক পদ্ধতিতে সম্পূর্ন প্রাকৃতিক খাবার সবুজ ঘাস,শুকনো খড়,কুড়া-ভুসি ও সাইলেজ খাবার খাইয়ে গরু মোটাতাজাকরণ করা হয়। যার জন্য বেশিরভাগ গরুই আমাদের নিজেদের কোম্পানির লোকজনই ক্রয় করে থাকে। তিনি আরো জানান,আমাদের ফার্মের গরুগুলো লাইভ ওয়েটের মাধ্যমে বিক্রি করে থাকি। ৪০০ থেকে ৬৩০ টাকা কেজি ওজনের গরু ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয় । এ ফার্মের গরুগুলোর যথেষ্ঠ চাহিদা থাকায় গত ১৫ দিনে ১৫০ টি গরুর মধ্যে ১২৩ টি বিক্রি হয়ে গেছে । ঈদের পূর্বেই সব গরু ক্রেতারা নিয়ে যাবেন। দাম ও ভালো পেয়েছেন বলে জানান তিনি ।
সিংগাইর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রেজাউল করিম বলেন, গো-খাদ্যের দাম বেশী হওয়ায় খামারিরা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে তাজা ঘাস,শুকনো খড়, কুড়া-ভুসি এবং নেপিয়ার ও ভুট্টা ঘাস দিয়ে সাইলেজ তৈরি করে খাবার খাইয়ে গরু মোটাতাজাকরণ করেন । এখনে স্টেরয়েড ব্যবহার হয় না। তিনি আরো বলেন, নিরাপদ গবাদিপশু গোসত উৎপাদনে খামারিদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে আমরা কাজ করছি। এ উপজেলায় কোরবানির ঈদে চাহিদা পূরন করে ও উদ্বৃত্ত গবাদি পশু ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় যাবে। এ ছাড়া উপজেলার ৬ টি হাটেই যাতে অসুস্থ গবাদিপশু বিক্রি করতে না পারে সেজন্য মেডিক্যাল টিম ও নিয়মিত কাজ করছে । পাশাপাশি হাটে আসা কোনো গবাদিপশু অসুস্থ হলে মেডিক্যাল টিম চিকিৎসা দেবে ।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply