ঢাকার সাভারে একটি জাল টাকা তৈরির কারখানায় অভিযান পরিচালনা করে তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় ৫০ লাখ ১৭ হাজার টাকা মূল্য মানের জাল টাকাসহ বিপুল পরিমান জাল টাকা তৈরির মেশিনও জব্দ করা হয়। বুধবার (২৪ মে) দুপুর ১টার দিকে অভিযান শেষে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব তথ্য জানান ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান পিপিএম (বার)।বুধবার (২৪ মে) বেলা ১১টা থেকে সাভারের বনগাঁও ইউনিয়নের সাধাপুর পুরানবাড়ির বছির বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশে সাউথ বেঙ্গল এপারেলস পোশাক কারখানার ভেতরে এই অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয়।লিশ জাল নোট তৈরির কারখানা থেকে বিভিন্ন নাম্বারের সর্বমোট ৫০ লাখ ১৭ হাজার টাকা মূল্য মানের জাল নোট, জাল টাকা তৈরীর কাজে ব্যবহৃত প্রিন্টার, ১ বোতল বিদেশি মদ, ১টি বিয়ার, ১০০ পিস ইয়াবা ও জাল টাকা তৈরির বিপুল পরিমান মেশিনসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদী ও উপকরণ উদ্ধার করে।
আটক হওয়া ব্যাক্তিরা হলেন- বরিশাল জেলার মুলাদী থানার ডিগ্রীরচর খান বাড়ির জয়নাল আবেদীন খানের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন খান (৪৫), শরিয়তপুর জেলার পালং থানার গয়াধর গ্রামের আল ইসলাম সরদারের ছেলে সুজন মিয়া (৩০) ও বরিশাল জেলার মুলাদী থানার বয়াতিকান্দি গ্রামের মানিক মোল্লার ছেলে নাজমুল হোসেন (২৪)। তাদের মধ্যে সাখাওয়াত হোসেন খান কারখানাটির মালিক বলে জানা গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আজ (বুধবার) সকালে সাভার বাসস্ট্যান্ডের অন্ধ মার্কেটের সামনে জাল টাকা দিয়ে লিচু কিনতে গেলে দোকানদারসহ স্থানীয়রা জাল নোট শনাক্ত করে ও একজনকে আটক করে সাভার মডেল থানায় খবর দেয়। পরে সাভার মডেল থানা পুলিশ আটক ব্যক্তিকে নিয়ে সাভারের বনগাঁও এর সাধাপুর পুরানবাড়ি এলাকায় ওই কারখানায় অভিযান পরিচালনা করে সম্পূর্ণ প্রস্তুত ৫০ লাখ ১৭ হাজার জাল টাকা ও আরও প্রিন্ট অবস্থায় ৫০ লাখেরও বেশি টাকার সন্ধান পায়। পরে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে কারখানার সব জাল টাকা উদ্ধার করে তিনজনকে আটক করা হয়।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গার্মেন্টসটির অভ্যন্তরে সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তাসহ কয়েকজনের সহায়তায় জাল নোট তৈরির কারখানা গড়ে তোলে। আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে গরুর হাটে এই জাল নোট ব্যবহার করে বিপুল অর্থের মালিক হওয়ার স্বপ্ন দেখছিলেন তারা। তাদের আরও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এ বিষয়ে বেসিক ব্যাংক শাখার কর্মকর্তা আদনান ইবনে সুলতান বলেন, জাল টাকা চেনার প্রথম প্রাথমিক উপায় হলো নিরাপত্তা দাগে ঘষলে হাতে একটু অনুভূত হবে। আসল টাকা ঘষলে বেশি অনুভূত হবে আর নকল টাকা ঘষলে কম অনুভূত হবে৷ আমরা যারা ব্যাংকে কাজ করি তারা সহজেই ধরতে পারি৷ সাধারণ মানুষের মাঝে এই টাকা ছড়িয়ে দেওয়া হলে সহজেই ধরতে পারবে না৷ এখানকার সব টাকাই জাল।
অভিযানে এসময় ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্ ও ট্রাফিক উত্তর) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহিল কাফি পিপিএম (বার), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. সাহিদুল ইসলাম, সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাশিদসহ ঢাকা জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply