শ্রীনগর উপজেলার হাঁসাড়া ও বাড়ৈখালি সড়ক ব্যবহার করে অবৈধভাবে ড্রেজারের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সড়কটির আলমপুর বাজার সংলগ্ন সেতুর পাশে খালে ড্রেজারের সাব-স্টেশন স্থাপন করেছে ড্রেজার সংশ্লিষ্ট একটি সিন্ডিকেট মহল। আলমপুর থেকে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি ব্যবহার করে বাড়ৈখালীর শ্রীধরপুর পর্যন্ত প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার জুড়ে ড্রেজার পাইপের সংযোগ দিয়ে কৃষিজমি ও বিভিন্ন জলাশয় ভরাট বাণিজ্য করছে। বাড়ৈখালী এলাকার আরশাদ নামে এক ব্যক্তির নেতৃত্বে সিন্ডিকেট মহলটি আড়িয়ল বিলসহ অত্র এলাকায় জমি ভরাট যজ্ঞ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রভাবশালী ড্রেজার সিন্ডিকেট চক্রের ভয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ ভয়ে কোন প্রতিবাদ করতে পারছে না। তবে প্রধান সড়কের পাশে বসতবাড়ি কিংবা গ্রামের লিংক রোডগুলো ড্রেজারের পাইপে আটকা পড়ায় যাতায়াতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হওয়ায় ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন।
তারা বলেন, সড়কের এক পাশ দিয়ে ড্রেজারের মোটা লোহার পাইপ টানার ফলে তাদের বাড়িতে চলাফেরায় ভোগান্তি হচ্ছে। এছাড়া বেশকিছু গ্রামীণ রাস্তার প্রবেশমুখে ড্রেজারের পাইপের ওপর উঁচু করে মাটি দিয়ে রাখায় অন্যান্য যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছে না। ড্রেজার ব্যবসায়ী চক্রের সদস্যরা কারও কথা শুনছে না। প্রভাব খাটিয়ে ভরাট বাণিজ্য করছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে বলেও কোন সমাধান পাচ্ছেন না।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, বাড়ৈখালী ইউনিয়ন পরিষদের এক ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে ভাড়ায় ড্রেজারটির সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অপর একটি সূত্র জানায়, আলমপুর বাজার সংলগ্ন সেতুর সামান্য দক্ষিণ দিকে খালে অপর একটি ড্রেজারের স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। এই ড্রেজারটি স্থানীয় এক সাবেক জনপ্রতিনিধির ছত্রছায়ায় পরিচালিত হচ্ছে।
সূত্রটি বলছে, এলাকার প্রভাবশালীরা যদি অবৈধভাবে ড্রেজার ও ভরাট বাণিজ্য করে তাহলে সাধারণ মানুষের কি বলার থাকে?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জিন্নাত আলী নামে এক ড্রেজার ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ভাড়ায় একটি ড্রেজার আলমপুর সেতুর উত্তর পাশে স্থাপন করে বাড়ৈখালীর ৯নং ওয়ার্ডের গাজী বাড়ির আরশাদ। তিনি এলাকায় মাটিখেকো হিসেবে পরিচিত। এ কাজে তিনি ওই এলাকায় গড়ে তুলেছেন একটি সক্রিয় ড্রেজার ও ভরাট বাণিজ্যের সিন্ডিকেট।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো. আরশাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি দম্ভ করে বলেন, ড্রেজার লাইন কার কি ক্ষতি করেছে? কেউ তো আমাদের কিছু বলছে না। স্থানীয় প্রশাসন ও এলাকার জনপ্রতিনিধিরা সব জানেন। তারা কিছু বলে না। আপনাদের সমস্যা হয় কেন?
এ ব্যাপারে বাড়ৈখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফারুক হোসেন জানান, প্রশাসন ছোট-খাটো অনেক ড্রেজারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু সড়কের ওপরে ড্রেজারটির দীর্ঘ লাইন দৃশ্যমান হওয়া সত্ত্বেও এ ড্রেজারটির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমি আশা করি, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ড্রেজারটির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
হাঁসাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. সোলায়মান খাঁন জানান, অবৈধ ড্রেজার বাণিজ্যের সদস্যরা এলাকায় বিভিন্নজনের নাম ভাঙ্গিয়ে অপপ্রচার চালায়। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে ড্রেজার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আহ্বান করছি।
শ্রীনগর উপজেলা সহকারী (ভূমি) সাফফাত আরা সাঈদ জানান, গত দু’দিন আগে ড্রেজারটির পাইপ খোলা অবস্থায় পেয়েছি। খোঁজ নিয়ে দেখছি। তারা যদি ড্রেজারটি এখনও চালিয়ে থাকে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply