দেওয়ান আবুল বাশার, মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জে ঘুমন্ত স্বামীর উপর গরম পানি ঢেলে দিয়েছেন স্ত্রী জুলেখা বেগম (৪০)। ঝলসানো শরীর নিয়ে নিজেই পাগলপারা হয়ে দৌড়ে হাসপাতালে যান তিনি। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকায় রেফার্ড করেন। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।
গত রবিবার রাত সাড়ে এগারোটায় সদর উপজেলার দিঘি ইউনিয়নের স্বল্প হাতকোড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী সাইজুদ্দিন (৫০) হাতকোড়া গ্রামের মৃত নীল চানের ছেলে।
জানা গেছে, গত রবিবার সন্ধ্যায় প্রতিদিনের মতো ভ্যান চালিয়ে বাড়ি আসেন সাইজুদ্দিন। রাতে ঘুমানোর সময় তার মানিব্যাগে কিছু টাকা কম দেখতে পান। স্ত্রীর সাথে এ নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। এরপর ঘুমিয়ে যান তিনি। রাত সাড়ে এগারোটার সময় চুলায় পানি গরম করে সে পানি ঘুমন্ত সাইজুদ্দিনের শরীরে ঢেলে দেয় তার স্ত্রী জুলেখা। গরম পানিতে মুহূর্তে তার শরীর মুখ ও মাথার কিছু অংশ ঝলসে যায়। এসময় চিৎকার করতে করতে নিজেই হাসপাতালে ছুটে যান সাইজুদ্দিন। এ ঘটনার পর থেকে স্ত্রী জুলেখা পলাতক রয়েছেন।
সাইজুদ্দিনের ছোট ভাই আইজুদ্দিন (৪৫) বলেন, ভাইয়ের চিৎকারে আমার ঘুম ভেঙে যায়। তার বাড়িতে আসতে আসতেই দেখি সে দৌড়ে হাসপাতালের দিকে যাচ্ছে। পরে আমিও তার পিছনে পিছনে যাই। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্ণেল মালেক মেডিকেল হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেন। বর্তমানে ভাই ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি আছে।
তার চাচাতো ভাই আরান আলী (৫৫) বলেন, সাইজুদ্দিনের বাড়ি থেকে আমার বাড়ি কিছুটা দূরে। রাত বারোটার দিকে হঠাৎ আমার বাড়ির সামনে বিকট শব্দে চিৎকারের শব্দ শুনে ঘুম ভেঙে যায়। বের হয়ে দেখি সাইজুদ্দিন চিৎকার করতে করতে হাসপাতালের দিকে ছুটে যাচ্ছে। পরে শুনতে পাই তার স্ত্রী জুলেখা তার উপর গরম পানি ঢেলে দিয়েছে।
প্রতিবেশী রেহাজ উদ্দিন (৫৭) বলেন দীর্ঘদিন ধরে স্বামীকে জমি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছিলেন তার স্ত্রী। এ নিয়ে মাঝেমধ্যেই তাদের বিবাদ হতো। রবিবার রাতে চিৎকার শুনে দৌড়ে সাইজুদ্দিনের বাড়িতে আসি। এর মধ্যেই সাইজুদ্দিন হাসপাতালের দিকে দৌড়াতে থাকে। আমি খালি গায়ে তার পেছন পেছনে যাই। কর্ণেল মালেক মেডিকেল হাসপাতালে গেলে ডাক্তার সেখান থেকে ঢাকায় রেফার্ড করে। তাকে সাথে নিয়ে আমি ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করি। ডাক্তার বলেছে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এর আগেও কিছু বখাটে ছেলেপেলে বাড়িতে এনে নিজের ঘরে স্বামীকে বেঁধে রেখেছিল তার স্ত্রী।
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিল হোসেন বলেন, এখনো লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply