মাদারীপুরের কালকিনিতে চোর সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়া হলে মিলন চন্দ্র হালদার নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দিবাগত আড়াইটার দিকে উপজেলার আলিনগর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কাদের আকনেরঘাট এলাকায় ওই যুবককে গণপিটুনি দেওয়া হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালকিনি থানার ওসি মো. নাজমুল ইসলাম।
মৃত মিলন চন্দ্র হালদার (৩৫) পিরোজপুর জেলার কাউক্ষলা উপজেলার হরিণধারা গ্রামের অমূল্য চন্দ্র হালদারের ছেলে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, উপজেলার আলিনগর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কাদের আকনেরঘাট এলাকার আড়িয়াল খাঁ নদীতে নাহিদুল খান ইঞ্জিনচালিত ট্রলার দিয়ে সারাদিন কাজ করে বিকালের দিকে বাড়ি ফিরে আসেন ট্রলার নিয়ে। এরপর তার ট্রলারটি নদীর পারে বাঁশের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রাখেন।
সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ৪-৫ জনের একটি দল ওই ট্রলারের রশি কাটছিল। এ সময় স্থানীয় এক লোক এ ঘটনা দেখতে পেয়ে চিৎকার দেন। এলাকার লোকজন ছুটি এলে অন্যরা পালিয়ে গেলেও ধাওয়া খেয়ে চোর মিলন চন্দ্র হালদার নদীতে পড়ে যায়। পরে তাকে পানি থেকে তুলে এনে বাড়ির পাশে একটি গাছে বেঁধে গণপিটুনি দিলে গুরুতর আহত হয়। পরে থানা পুলিশকে খবর দিলে তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে নেওয়ার পূর্বে তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সালাম সরদার জানান, রাতে মিলন নামের এক চোর ট্রলার চুরি করতে এসে মারধরের শিকার হয়ে মারা গেছেন।
ট্রলারের মালিক নাহিদুল ইসলাম খান বলেন, আমি ট্রলার দিয়ে সারাদিন কাজকর্ম করে সন্ধ্যার দিকে ট্রলার নদীর পাড়ে বেঁধে আমার বাড়িতে চলে যাই। পরে রাত ১০টার দিকে এসে দেখি ট্রলার ঠিক আছে। এর ঘণ্টা দুয়েক পরে কোন এক লোকের চিৎকার শুনে নদীর পাড়ে এসে দেখি আমার ট্রলার চুরি করতে এসেছে। পরে চোরকে লোকজন মারধর করে পুলিশকে খবর দেন। পরে সকালে এসে তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।
এ ব্যাপারে কালকিনি থানার ওসি নাজমুল হাসান বলেন, নাহিদুল খানসহ স্থানীয়রা চোর সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়ায় মিলন নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে চুরির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply