1. tanjimislam222@gmail.com : block :
  2. doharbartanews@gmail.com : Tanjim Islam : Tanjim Islam
মহাকবির জন্মস্থানে নেই স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণের উদ্যোগ - Dohar Barta24
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন

মহাকবির জন্মস্থানে নেই স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণের উদ্যোগ

  • Update Time : সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৫৭ Time View

বিখ্যাত আযান কবিতার ‘কে ওই শোনাল মোরে আযানের ধ্বনি’- লাইনটি শুনলেই বা পড়লেই মনে পরে যায় মহাকবি কায়কোবাদের কথা। অবশ্য কবির প্রকৃত নাম মুহাম্মদ কাজেম আল কোরেশী। তিনি ১৮৫৭ সালের ২৫ শে ফেব্রæয়ারি ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জের আগলা ইউনিয়নের অধীনে আগলা-পূর্বপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন ঢাকা জেলা জজ কোর্টের আইনজীবী শাহামাতুল্লাহ আল কোরেশী। কায়কোবাদ সেন্ট গ্রেগরি স্কুলে অধ্যয়ন করেন। পিতার অকালমৃত্যুর পর তিনি ঢাকা মাদ্রাসাতে (বর্তমান কবি নজরুল সরকারি কলেজ) ভর্তি হন যেখানে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষা পর্যন্ত অধ্যয়ন করেছিলেন। কিন্তু তিনি পরীক্ষা না দিয়ে পোস্টমাস্টারের চাকরি নিয়ে স্থানীয় প্রামে ফিরে আসেন। সেখানেই তিনি অবসর গ্রহণের আগ পর্যন্ত কাজ করেছেন।

বাংলা সাহিত্যে ব্যাপক অবদানের জন্য মহাকবি কায়কোবাদ সারা দেশের মানুষের কাছে সমাদৃত। তবে জন্মস্থান ঢাকার নবাবগঞ্জ এখনো অবহেলিত। নিজ গ্রামে কবির স্মৃতিচিহ্ন বলতে তেমন কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। জন্মস্থানে মহাকবির স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণের উদ্যোগ নিচ্ছেন তা কেউ!

অতি অল্পবয়স থেকে কায়কোবাদের সাহিত্য প্রতিভার বিকাশ ঘটে। মাত্র তেরো বছর বয়সে তাঁর প্রথম কাব্য বিরহবিলাপ (১৮৭০) প্রকাশিত হয়। কায়কোবাদের মহাশ্মশান হচ্ছে মহাকাব্য। তৃতীয় পানিপথের যুদ্ধ অবলম্বনে রচিত এ কাব্যে জয়-পরাজয় অপেক্ষা ধ্বংসের ভয়াবহতা প্রকট হওয়ায় এর নাম হয়েছে ‘মহাশ্মশান’। এটি তাঁর শ্রেষ্ঠ রচনা যার কারনে তিনি মহাকবি রূপে খ্যাতি অর্জন করেন।

তবে নিজ এলাকায় অবহেলিত কায়কোবাদ। দুই একটি সংগঠনই শুধু স্মরণে রেখেছেন মহাকবিকে। এরমধ্যে মহাকবি কায়কোবাদ স্মৃতি সংসদ ও মহাকবি কায়কোবাদ মুক্ত স্কাউট অন্যতম। জন্ম ও মৃত্যুবাষির্কী উপলক্ষে মহাকবি কায়কোবাদ স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে বিভিন্ন মসজিদে দোয়ার আয়োজন ও তার সমাধিস্থল ঢাকার আজিমপুর পুরনো কবরস্থানে কবর জিয়ারত ও দোয়ার আয়োজন করা হয়। এছাড়া, অন্য কোনো সংগঠন ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়না।

শনিবার কায়কোবাদের গ্রামে ও তার বসতভিটায় সরেজমিনে দেখতে গেলে শুনতে হয় কায়কোবাদের তো কিছুই নেই। তার বাড়ি প্রবেশের আগেই চোখে পরে মহাকবি কায়কোবাদের নামের বিদ্যালয়, তার পাশেই আছে কায়কোবাদ যে পোষ্ট অফিসে কাজ করতেন সেই পোষ্ট অফিসটি। পোষ্ট অফিসের কাজ চলমান থাকলেও নেই বিদুৎতের ব্যবস্থা। কিছুদূর যেতেই চোখে পরে রাস্তার পাশেই একটি ভাঙ্গা ঘর। বর্তমানে অনেকে বলে এটিই কায়কোবাদের ঘর।

যারা কবির বাড়িতে বসবাস করছেন তারা বলেন, আমরা জমি কিনে বাড়িঘর করেছি। আমাদের সব কিছুর দলিল আছে। সরকার যদি মহাকবির জন্য যদি কিছু করে, তাহলে আমাদের পূর্ণবাসন করে দিলে আমরা তার বাড়িঘর ছাড়তে রাজি আছি। আমরাও চাই মহকবি আমাদের থেকে শুরু করে পরের জন্মের মাঝেও বেঁচে থাকুক।

মহাকবি কায়কোবাদ স্মৃতি সংসদের বিষ্ণুপদ সাহা বলেন, ‘কবি কায়কোবাদ নিজ এলাকায় কতটা অবহেলিত তাঁর এলাকায় না এলে কেউ বুঝতে পারবে না। সারা বাংলাদেশের মানুষ তাকে চিনে অথচ তার নামে একটা সড়কের নামকরণ করা হয়নি। মহাকবি কায়কোবাদের স্মৃতি বলতে কিছুই নেই। আমরা কিছুই খুঁজে পাচ্ছি না। জনপ্রতিনিধি বা সরকারি উদ্যোগে মহাকবির স্মৃতি ধরে রাখতে নিজ এলাকায় পাঠাগার নির্মাণ করার দাবিও জানান তিনি।

সাবেক দোহার নবাবগঞ্জ কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক এস এম মোশারফ হোসেন বলেন, কায়কোবাদের নাম চিরতরে যাতে না মুছে যায় সে জন্যই প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদেরকে বিনামূল্যে তার জীবনী ও কাব্যগ্রন্থগুলো দেওয়া যেতে পারে। তার কাব্যগুলো যদি অনুবাদ ও ভাষা সহজ করে দেওয়া হয় তাহলে বর্তমান প্রজন্ম পড়তে আগ্রহী হবে । তাছাড়া কাব্যগুলো যদি হাতের নাগালের দামে ক্রয় করা যায় তাহলে অনেকে ক্রয় করতে পারবে।

স্থানীয় বাসিন্দা এস.এম পারভেজ লিল্টু জানান, মহাকবি কায়কোবাদ নবাবগঞ্জের গর্ব। বাড়ির সামনে যে মসজিদের আজান শুনে কবি ‘আযান’ কবিতাটি লিখেছিলেন, সেটি এখন কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

মহাকবি কায়কোবাদের পতি কাজী আল কুরাইশী বলেন, তাদের সব কিছু দখল করে নিয়ে গেছে। তাদের কিছুই নেই। বংশধর হিসেবে তাদের প্রাপ্য সম্মানটুকু যাতে দেওয়া হয়। আর যাই কিছু করা হউক তাদের যেন সাথে রাখা হয়।

এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ ঝিলু বলেন , ‘মহাকবি কায়কোবাদের স্মৃতি সংরক্ষণে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্য সালমান ফজলুর রহমান বিষয়টি জানানো হয়েছে। অতিশীঘ্্রই তার বাড়ি পুনরুদ্ধার করে কায়কোবাদের নামে দৃশ্যমান, পাঠাগার, যাদুঘর সহ আরো কিছু বানানো চিন্তা ভাবনা রয়েছে। কায়কোবাদ চত্বরটি এখনো সেই নামেই আছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© স্বর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Customized By BreakingNews

You cannot copy content of this page