ফরিদপুরের সালথায় মদন হাজীর ওরসের মেলা বন্ধ করা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে এক ইউপি সদস্যসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার রাতে ও রোববার সকালে উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মাঝারদিয়া গ্রামে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাঝারদিয়ার খলিশপট্টি গ্রামে মদন হাজী বাড়িতে ওরস উপলক্ষে প্রতিবছর মেলা বসে। ওই মেলায় হরেক রকমের দোকানদারদের কাছে লাখ লাখ টাকা চাঁদা তুলে ভাগাভাগি করে নেন স্থানীয় দুটি পক্ষের প্রভাবশালীরা।
এবারও গত শুক্রবার থেকে ১৩৭ তম তিন দিনব্যাপী ওরস শুরু হয়। একই গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান সাহিদুজ্জামান সাহিদ ও বর্তমান ইউপি সদস্য মো. কবির হোসেন মেলা বসান। বিষয়টি নিয়ে ওরস শুরু পর থেকে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।
এই মেলার বিরোধিতা করে আসছিল মাঝারদিয়া গ্রামের সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. ফারুক হোসেন ও তার লোকজন।
অন্যদিকে মেলার নামে অশ্লীল নৃত্য, মাদক ও জুয়ার আসর বসিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠে আয়োজক কমিটির বিরুদ্ধে। একপর্যায় মেলায় অশ্লীল নৃত্য, জুয়া ও মাদকের আড্ডার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ হলে শনিবার রাতে মেলাটি বন্ধ করে দেন উপজেলা প্রশাসন।
এরই জের ধরে শনিবার রাতে ও রোববার সকালে দুপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ইউপি সদস্য বক্কার হোসেন, সিরাজ মোল্যা, সুমন, শাহ আলম, ফায়জুর, মাসুদ গোলদার, জালাল সিকদার ও বিশুসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
মো. ফারুক হোসেন বলেন, সকালে আমার দলীয় লোকজন মাঠে কাজ করতে গেলে তাদেরকে এলোপাথাড়ি মারধর করে কবির মেম্বারের লোকজন। এ সময় বক্কার মেম্বারকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে তারা। তাছাড়া আমার দলীয় লোকজনের পাঁচটি বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাংচুর ও লুটপাট করে নিয়ে যায়।
ইউপি সদস্য কবির হোসেন বলেন, খলিশপট্টি মদন হাজী বাড়ির মেলা ১৩৬ বছরের ঐতিহ্য। এই মেলাটি ভণ্ডুল করতে অপচেষ্টা চালায় ফারুক হোসেন ও তার লোকজন। মেলার মধ্যে ঢাল সড়কি নিয়ে ডুকে পড়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। পরে প্রশাসনের লোকজন এসে মেলা বন্ধ করে দেন।
তিনি বলেন, রোববার সকালে আমার দুই ভাই পেঁয়াজ ক্ষেতে কাজ করতে গেলে বক্কার মেম্বারসহ কয়েকশত লোকজন তাদেরকে আটক করে মারধর করে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মূলত তারা মেলার নেতৃত্ব দিতে না পারায় এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে।
সালথা থানার ওসি মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকার পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply