ঢাকার কেরানীগঞ্জে এক মাস বাসায় আটকে রেখে হাত-পা বেঁধে কিশোরী গৃহকর্মীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগে দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রোববার সন্ধ্যায় শুভাঢ্যা ইউনিয়নের গোলামবাজার রোডের নিজ বাড়ি থেকে অভিযুক্ত গৃহকর্তা স্বপন ও তার স্ত্রী নাসরিনকে গ্রেফতার করা হয়।
জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে খবর পেয়ে ৮ আগস্ট দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার এসআই নাসিরুজ্জামান ওই বাসা থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করেন। পর দিন ৯ আগস্ট ভিকটিমের মা বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
তার মা অভিযোগ করেন, এসআই নাসিরুজ্জামান অভিযুক্ত স্বপনের কাছ থেকে দুই দফায় এক লাখ টাকা নিয়ে এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। উপরন্তু তিনি অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়ে তাকে আপস-মীমাংসার প্রস্তাব দেন।
তিনি জানান, এক বছর আগে স্বপনের স্ত্রী নাসরিন তার মেয়েকে বাসায় গৃহকর্মীর কাজ দেন। ছয় মাস পর্যন্ত ভালো আচরণ করেন। একা রুমে থাকার কারণে স্বপনের কুনজর পড়ে তার মেয়ের ওপর। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ার কারণে মিথ্যা চুরির অভিযোগ দিয়ে কিশোরীর হাত-পা বেঁধে এক মাস ধরে স্বপনের বাড়ির ঘরের এক রুমে তালা দিয়ে রাখা হয়।
ভিকটিম কিশোরী জানায়, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে শুধু রাতে একবেলা খাবার দিত। এ সময় গোপনাঙ্গসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আগুনের ছ্যাকা দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হতো।
প্রতিবেশী বাড়ির লোকজন রাতে প্রায়ই মেয়েটির কান্নার শব্দ শুনতে পেত। পরে এলাকার লোকজন ভিকটিমের মাকে খবর দেয়। ভিকটিমের মা লোকজনের সহায়তায় ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ এসে ভিকটিমকে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে দিয়ে যান।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহজামান বলেন, সংশ্লিষ্ট এসআইয়ের দায়িত্বহীনতার কারণে মামলা নিতে দেরি হয়েছে। ওই এসআই আমাকে এ বিষয়ে অবহিত করেনি। রোববার ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি নিজে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত দম্পতিকে গ্রেফতার করেছি। তারা থানা হাজতে আছে। সোমবার তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply