আবার এলো দেবীপক্ষ। দক্ষিণায়নের দিন। কৈলাসশিখর থেকে তার আগমনিবার্তায় বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে উত্সবের রোশনাই। আজ ‘মহালয়া’। হিন্দুদের বিশ্বাস, শরতের বাতাসে এখন যেন মন্দ্রিত হচ্ছে রূপংদেহি, জয়ংদেহি, যশোদেহি, দ্বিষোজহির সুরলহরি। ইতিমধ্যে সেজে উঠছে মণ্ডপগুলো। সৌর আশ্বিনের কৃষ্ণপক্ষের নাম ‘মহালয়া’।
হিন্দু পুরাণে আছে, সৌর উত্তরায়ণকালে বিষ্ণুলোকে যখন দিন, যমলোকে তখন রাত-দক্ষিণায়ন। উত্তরায়ণের ছয় মাস দেবতারা জেগে থাকেন, বিষ্ণুলোকের তোরণ থাকে অবারিত। দক্ষিণায়নের ছয় মাস দেবতারা নিদ্রিত। কিন্তু যমলোকে দিনমান, দুয়ার খোলা। দক্ষিণায়নের পয়লা দিনে ঘুম ভেঙে জেগে উঠেই বন্ধ দুয়ার ঠেলে পিতৃপুরুষেরা ছুটে আসবেন মর্ত্যলোকে। এ সময় তারা থাকেন ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর। উত্তরপুরুষদের হাতে একটু শ্রাদ্ধাহার পেলেই তারা পরম তৃপ্ত। সে অর্থে মহালয়া মর্ত্যলোকে পরলোকগত পিতৃগণের একত্র ক্ষণিক আবাস। দশ প্রহরণধারিণী দেবী দুর্গার আগমন—ক্ষণে এ যেন ‘নান্দিমুখ’।
দুর্গোত্সবের তিন পর্ব যথা :মহালয়া, বোধন আর সন্ধিপূজা। মহালয়ায় পিতৃপক্ষ সাঙ্গ করে দেবীপক্ষের দিকে যাত্রা হয় শুরু। ২০ অক্টোবর সায়ংকালে অকালবোধনে খুলে যাবে মা দুর্গার শান্ত-স্নিগ্ধ অতল গভীর আয়ত চোখের পলক। এবারের পূজার নির্ঘণ্ট অনুযায়ী আগামী ২০ অক্টোবর শুক্রবার মহাষষ্ঠীতে সাড়ম্বরে শুরু হবে দুর্গাপূজা। ২১ অক্টোবর শনিবার মহাসপ্তমী, ২২ অক্টোবর রবিবার মহাঅষ্টমী। সেদিন তাদের কুমারী পূজা থেকে সন্ধিপূজার তিথি। মহানবমী ২৩ অক্টোবর সোমবার। পরের দিন ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের শারদীয় দুর্গোত্সব।
এদিকে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা জানান, এ বছর সারা দেশে দুর্গাপূজার সংখ্যা ৩২ হাজার ৪০৮টি। রাজধানীতে পূজামণ্ডপের সংখ্যা ২৪৫টি।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply