শ্রমিক আন্দোলনের মুখে সম্প্রতি সরকার পোশাক শ্রমিকদের মজুরি ন্যূনতম ১২ হাজার ৫০০ টাকা ধার্য করেছে। বাজারে দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি হওয়ায় ন্যূনতম ২৩ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে সাভারের কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কে বুধবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ ঘটনায় আশুলিয়ার কয়েকটি পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়।
পোশাক শ্রমিক সূত্রে জানা যায়, শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা ধার্য করার পর আশুলিয়ার বেশ কিছু কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। এর মধ্যে কিছু কারখানার শ্রমিকরা সরকারের বেঁধে দেওয়া মজুরিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এর কারণ হিসেবে শ্রমিকরা জানান, দেশে দ্রব্যমূল্য সর্বোচ্চ ঊর্ধ্বগতি। দুই কেজি আলু আর একটি মুরগি কিনলেই হাজার টাকা ফুরিয়ে যায়। অন্যান্য নিত্যপণ্যের কথা বাদই দিলাম। এ অবস্থায় একজন শ্রমিকের জন্য ১২ হাজার ৫০০ টাকা মজুরি যথাযথ নয়। তাই শ্রমিকরা ন্যূনতম ২৩ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে।
জামগড়ার হলিউড গার্মেন্টস প্রাইভেট লিমিটেড কারখানার এক শ্রমিক বলেন, আপনারাও একই দেশে বসবাস করছেন। তাই আপনাকে আলাদা করে বুঝানোর কিছু নেই। কারণ আপনিও এ বিষয়গুলো মোকাবেলা করছেন। তাই একজন পোশাক শ্রমিক ৫ হাজার টাকা ঘর ভাড়া দিয়ে অন্যান্য ব্যয় করে মাস শেষে বেশ কিছু টাকা ঋণ হতে হয়।
কারখানা কর্তৃপক্ষরা বলেন, সকালে শ্রমিকরা কারখানায় এলেও অধিকাংশ ফ্লোরে কাজ বন্ধ রাখেন শ্রমিকরা। বেলা ১১টার দিকে কিছু শ্রমিক বাইরে বের হয়ে জড়ো হলে কারখানা কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে ছুটি ঘোষণা করেন। কিছুক্ষণ পর ওই এলাকায় শ্রমিকরা কারখানার সামনের আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কে জড়ো হন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে পুলিশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে শ্রমিকরা ২টা পর্যন্ত শান্ত ছিল। আড়াইটার দিকে নরসিংহপুর এলাকার আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কের বিভিন্ন স্থানে আবারো জড়ো হতে থাকেন শ্রমিকরা। এ সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ নাসের জনি বলেন, সকালে বেশ কিছু কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। কিছু কারখানার শ্রমিকরা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সড়কে জড়ো হলে অন্যান্য কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে তাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেয়। পরে তারা সড়ক অবরোধ করতে চাইলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply